রান্না করা যেমন বেঁচে থাকার তাগিদ তেমনি সৌখিন রান্না মানেই নান্দনিকতা। কিন্তু বর্তমান সময়ে নারী-পুরুষ উভয়েরই কর্মব্যস্ততা বাড়ছে। এর সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিভিন্ন ঝামেলা। তাই নিয়মিত রান্নাবান্না সময় সাপেক্ষ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ রান্না করতে বেশ সময় নষ্ট হয়। এই সময়ের মধ্যে অনেক কাজ গোছানো সম্ভব।
তাই যদি চটজলদি রান্না সেরে নেওয়া যায় তাহলে অনেকটা সময় বেঁচে যায়। সেজন্য দ্রুত রান্না শেষ করার কিছু কৌশল জানা থাকলে রান্না যেমন তাড়াতাড়ি শেষ হয় তেমনি সময়ও বাঁচে। আজকের আলোচনায় জেনে নিন কিভাবে দ্রুত সময়ের মধ্যে রান্না শেষ করা যায়।
আপনার প্রিয় ভাষা নির্বাচন করুন
দ্রুত রান্নার ২০টি কৌশল
১. অনেকেই রান্নার সময় কি রান্না করবেন ভেবেই সময় পার করেন। তাছাড়া কর্মজীবী নারীদের জন্য নিয়মমাফিক রান্না করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কি কি রান্না করবেন তা যদি আগেই প্ল্যান করে রাখেন তবে রান্না করতে সহজ হয়। তাই ৭দিনের একটি রান্নার লিস্ট তৈরি করুন ও সেই অনুযায়ী বাজার করুন। এতে অনেকটাই সময় বাঁচবে তাছাড়া মানসিক চাপও কমবে।
২. রান্নার সময়ে হাতা, খুন্তি, তেল-মশলা, চপার-ছুরিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্রের প্রয়োজন হয়। সেগুলো হাতের নাগালে রাখুন। এতে করে রান্নার সময় তাড়াহুড়ো করে খুঁজতে হবে না।
৩. মশলার কৌটা গুলোর গায়ে লেভেল লাগিয়ে নিন। চিনি-লবণ, মরিচ গুঁড়া, জিরা গুঁড়ার গায়ে নাম লিখে হাতের নাগালে রাখুন।
৪. খুব সকালে রান্না করার দরকার হলে আগের দিন সবজিগুলো কেটে রাখুন। কারণ সবজি কাটতে অনেকটা সময় ব্যয় হয়। সবজি কাটা থাকলে দ্রুত রান্না করা যায়।
Sign up for our newsletter
Get SeraChoice independent reviews, expert advice, and intensively researched deals sent straight to your inbox.
For information about our privacy practices, including how to opt out of marketing emails, see our Privacy Policy. For general questions, contact us anytime.
৫. সকালে ডাল সেদ্ধ করার জন্য আগের দিন রাতে ভিজিয়ে রাখুন অথবা সকালে প্রেশার কুকারে দিয়ে সেদ্ধ করুন। এতে ডাল দ্রুত সেদ্ধ হবে আবার সময়ও বাঁচবে।
৬. আলু সেদ্ধ করার সময় তাতে একটু লবণ দিলে খোসা দ্রুত ছাড়িয়ে ফেলা যায়।
৭. মাছ-মাংস ফ্রিজে রাখলে রান্নার ঘন্টা খানেক আগে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এতে এগুলো দ্রুত গলে যাবে।
৮. মাছ-মাংস বাজার থেকে আনার পর ভালোভাবে ধুয়ে আলাদা আলাদা ভাগে ভাগ করে রাখুন। যাতে যতটা দরকার ততটা রান্নার সময় ভিজিয়ে রাখতে পারেন। এতে মাছ-মাংস দ্রুত গলে যায়।
৯. মাংস দ্রুত সেদ্ধ করার জন্য প্রেশার কুকার ব্যবহার করতে পারেন।
১০. হাঁড়ির তুলনায় প্রেশার কুকারে ভাত খুব দ্রুত রান্না হয়। তাছাড়া ভাত, পোলাও খিচুড়ি রান্নার জন্য রাইস কুকারও ব্যবহার করতে পারেন।
১১. মশলা রান্নার সময় বেটে নিলে অনেকটা সময় নষ্ট হয়। তাই অবসর সময়ে ধনে, জিরা, মরিচ, আদা, রসুন, পেঁয়াজ সহ দরকারি মশলা বেটে রাখুন বা ব্লেন্ড করে রাখুন। মসলার পেস্ট কমপক্ষে ১সপ্তাহের জন্য তৈরি করে রাখুন।
১২. রান্নার সময় গরম পানি ব্যবহার করলে দ্রুত রান্না করা যায়। তাছাড়া রান্নার স্বাদও অটুট থাকবে।
১৩. নাস্তা আইটেম বা বাচ্চার টিফিন অবসর সময়ে বেশি করে বানিয়ে ডীপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। ফ্রোজেন পিজ্জা, কাবাব, মোমো, চিকেন ফ্রাই সহ মজার নাস্তা ফ্রোজেন করে রাখতে পারেন। এধরণের ফ্রোজেন আইটেম অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকে। যখন দরকার ঝটপট ভেজে নিন।
১৪. যারা স্বামী স্ত্রী উভয়ই কর্মজীবী তারা রাতে সারাদিনের রান্না করতে পারেন। তাছাড়া বেশি করে রান্না করে ১-২ দিন ফ্রিজে রেখে খেতে পারেন।
১৫. মাছ বা মাংস রান্নার আগে মসলা দিয়ে ম্যারিনেট করে রাখুন। এতে দ্রুত রান্না হবে। তাছাড়া ম্যারিনেট করে ছোট ছোট বক্স করে ডীপ ফ্রিজে দুই-তিন দিনের জন্যও রাখতে পারেন।
১৬. দ্রুত রান্নার জন্য গ্যাসের চুলার সবগুলো চুলায় ব্যবহার করুন। একটা রান্না শেষ করে অন্যটি বসিয়ে দিন। কোনো চুলায় খালি রাখবেন না। এতে দ্রুত রান্না শেষ হবে।
১৭. সবজি বা মাছ ভাজি করার জন্য ননস্টিক ফ্রাই প্যানের ব্যবহার করতে পারেন। এতে মাছ লাগে না আর অল্প তেলে দ্রুত রান্না হয়।
১৮. বিভিন্ন ধরনের সস বা আচার আগেই তৈরি করে রাখুন। এতে রান্না সহজ হয়।
১৯. সকালে বা রাতে নাস্তার জন্য রুটি অনেকের পছন্দ। রুটির ডো বানিয়ে ২/৩ দিন এয়ারটাইট বক্সে করে ফ্রিজে রাখতে পারেন। আবার একসাথে অনেকগুলো রুটি বানিয়ে হালকা সেঁকে বক্সে সংরক্ষণ করা যায়। খাবার সময় ভালো করে সেঁকে নিলে হয়। এতে সময়-শ্রম উভয়ই বাঁচে।
২০. রান্নার জন্য সবসময় স্মার্ট গেজেট ব্যবহার করুন। স্মার্ট গেজেটের কারণে রান্না আরও সহজ ও স্বল্প সময়ে করা যায়। চপার-ছুরি, গ্যাস বার্নার, মাইক্রোওয়েভ, ব্লেন্ডার, বিটার, কাটার প্রভৃতি গেজেট ব্যবহার করে স্মার্ট ওয়েতে দ্রুত রান্না করতে পারেন।
উপসংহার
প্রয়োজনের তাগিদেই মানুষ রান্না করে। কিন্তু আজকাল ব্যস্ততার কারণে মানুষ বাধ্য হয়েই দ্রুত রান্নার কৌশল অবলম্বন করছে। রান্না গুছিয়ে ও প্ল্যান মাফিক করতে পারলে দ্রুত শেষ করা যায়। এতে সময় আর শ্রম বাঁচে, কমে মানসিক চাপ।